তরুণ প্রজন্ম একটি জাতির মেরুদন্ড। আজকের তরুণ প্রজন্ম, ভবিষ্যত জাতি গঠনের কান্ডারি। তাই তাদের সার্বিক দক্ষতা বিকাশ এবং পাশাপাশি মানবীয় এবং নৈতিক গুণাবলির উতকর্ষ সাধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত প্রেনিউর ল্যাব এবং ফ্রেডরিখ নাউম্যান ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই মন্ত্রেই বিশ্বাসী। প্রতিষ্ঠান দুটি যুগ্মভাবে “ফ্রিডম ফেলোস” নামে একটি চারদিনব্যাপী বুটক্যাম্পের আয়োজন করে যেটির চূড়ান্ত পর্যায়ের অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় কক্সবাজারের সৈকত সংলগ্ন হোটেল কল্লোল-এ ।
মূলত এই দুটি প্রতিষ্ঠান বছরের বিভিন্ন সময়েই যুগ্মভাবে এই বুটক্যাম্পটির আয়োজন করে থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের অসংখ্য তরুণ তরুণীরা এই বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণ করে থাকে। সর্বশেষ বুটক্যাম্পটি করার জন্য আবেদনকারীদেরকে প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের নিজেদের খরচে দেশের অন্যতম বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে নিয়ে যায়। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের থাকা-খাওয়া সহ যাবতীয় বিষয় বুটক্যাম্প কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সুনিশ্চিত করা হয়।
চারদিনব্যাপী এই বুটক্যাম্পের মাধ্যমে আয়োজিত কর্মশালায় অংশপগ্রহণকারীদেরকে বিবিধ বিষয়বস্তুর উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ৭ নভেম্বর, ২০২২ ছিল কর্মশালাটির প্রথম কার্যদিবস। এইদিনের কার্যক্রমে ছিল পরিচিতি পর্ব, সেশন সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা, বিষয়বস্তু বাছাই ইত্যাদি।
মূল কর্মশালাটি শুরু হয় দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ৮ নভেম্বর, ২০২২। এইদিন চারটি ভিন্ন বিষয়ের উপর ভিন্ন চারটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। ৮ তারিখের প্রথম সেশনটির বিষয়বস্তু ছিল “কন্টেন্ট তৈরি এবং গল্প বলার ক্ষমতা”। এই সেশনটি পরিচালনা করেন জনাব আরিফ নিজামী, প্রেনিউর ল্যাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং সৈয়দ নাজমুল হোসেন, বাংলা ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা। “সহনশীলতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা” – এই বিষয়বস্তুটির উপর এইদিনের দ্বিতীয় সেশনটি অনুষ্ঠিত হয়, যেটির পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব ওমর মোস্তাফিজ এবং জনাব তানভীর আহসান। তৃতীয় সেশনটির বিষয়বস্তু ছিল “মিথ্যা সংবাদ এবং সত্য নির্ণয়”। এই সেশনটিতে বক্তার ভূমিকা পালন করেন রাখশান্দা রুখাম, প্রেনিউর ল্যাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে সেশনটি পরিচালনা করে। প্রথম কার্যদিবসের সর্বশেষ সেশনটির বিষয়বস্তু ছিল “ডিজিটাল অধিকার এবং অনলাইন গোপনীয়তা” এবং জনাব আশরাফুল তানভীর, হেড অফ অপারেশন্স এবং এ্যাডমিন, প্রেনিউর ল্যাব ছিলেন সেশনটির পরিচালনার দায়িত্বে।
কর্মশালাটির তৃতীয় কার্যদিবস ছিল ৯ নভেম্বর ২০২২। এই দিন প্রথম সেশনটির বিষয়বস্তু ছিল “অর্থনৈতিক স্বাধীনতা”, যার দায়িত্বে ছিলেন ড. নাজমুল হোসেন, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, এফএনএফ বাংলাদেশ। এইদিন একটি প্যানেল ডিসকাশন পর্ব অনুষ্ঠিত হয় যার মূখ্য বক্তা ছিলেন মাহমুদুল হাসান, কান্ট্রি এইচআর, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল এবং রাকিবুল ইসলাম, সিনিয়র এইচআর অফিসার, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল। এইদিনটিতে অংশগ্রহণকারীগণ তাদের বানানো ভিডিও কন্টেন্ট জমা দেন।
কর্মশালাটির চতুর্থ এবং সর্বশেষ কার্যদিবস ছিল ১০ নভেম্বর ২০২২। এইদিনটিতে পাঁচটি ভিন্ন বিষয়বস্তুর উপর কন্টেন্ট বানানোর জন্য পাঁচজন প্রতিযোগির নাম বিজয়ী হিসাবে ঘোষিত হয় সার্বিক কন্টেন্টগুলোর উপর বিচারকগণ তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। সর্বশেষ বিজয়ীদের হাতে সার্টিফিকেট সহ বিশেষ পুরস্কার এবং সমগ্র অংশগ্রহকারীদের হাতেও সার্টিফিকেটসহ অংশগ্রহণের পুরস্কার তুলে দেওয়ার মাধ্যমে কর্মশালাটির পরিসমাপ্তি ঘটে।
তরুণদের সৃজনশীলতা এবং দলগত কার্যসম্পাদনে দক্ষতার বিকাশে এই ধরণের কর্মশালাগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই কর্মশালাটি সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীগণ অত্যন্ত উৎসাহিত এবং সন্তুষ্ট ছিলেন। প্রেনিউর ল্যাব এবং ফ্রেডরিখ নাউম্যান ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ পরবর্তীতে এই ধরণের আরো উদ্যোগ গ্রহণে আশাবাদী।